শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১
The Daily Post

হার্ডিং ব্রিজ পয়েন্টে পানি বৃদ্ধিতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই : পাউবো  

ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি

হার্ডিং ব্রিজ পয়েন্টে পানি বৃদ্ধিতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই : পাউবো  

কুষ্টিয়ার বিভিন্ন উপজেলার মধ্য দিয়ে বয়ে চলা দেশের অন্যতম বৃহত্তম পদ্মা নদীর হার্ডিং ব্রিজ পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে বিপদ সীমার অনেক নিচে আছে বলে আশ্বস্ত করে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি বিজ্ঞান শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিম।

বর্তমানে পদ্মা (গঙ্গা) নদীর ৯০, হার্ডিং ব্রিজ স্টেশনের এ পয়েন্টে পানির লেভেল সম্পর্কে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি বিজ্ঞান শাখার উপসহকারী প্রকৌশলী ইলিয়াস হোসেন বলেন, মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) গত কয়েকদিনের চেয়ে পদ্মার হার্ডিং ব্রিজ পয়েন্টে পানির পরিমাণ একটু বেশি। 

ভেড়ামারা হাইড্রোলজি সেকশন সকাল ৬টায় পানির লেভেল পায় ১১.৯৬ মিটার, সকাল ৯ টায় পায় ১১.৯৭ মিটার, যা দুপুর ১২টায়ও অপরিবর্তিত ছিল। এই পয়েন্টে পানির সর্বোচ্চ বিপদ সীমার লেভেল ১৩.৮০ মিটার। যা থেকে বর্তমান পানির লেভেল ১.৮২ মিটার নিচে আছে। সুতরাং আতঙ্কিত হওয়ার তেমন কিছু নেই। 

তাছাড়াও এ মৌসুমে পানির সর্বোচ্চ রেকর্ড ছিল ১২.১৮ মিটার। ভেড়ামারা হাইডোলজি সেকশনের তথ্য অনুযায়ী, গত ২২শে আগস্ট হার্ডিং ব্রিজ পয়েন্টে পানির লেভেল ছিল ১১.৯৭ মিটার। ২৩ আগস্ট তা কমে ১১.৯৫ মিটারে নেমে আসে। হঠাৎ করে উজানে বৃষ্টি হওয়ার কারণে এই পানির পরিমাণ আবার বৃদ্ধি পেয়েছে। 

এদিকে দেশের প্রথম সারির সব গণমাধ্যমে ফারাক্কা গেটের ১০৯ টি দ্বার খুলে দেয়ার খবর প্রকাশ পেলে জনমনে ভীতি সৃষ্টি হয়। সেক্ষেত্রে কুষ্টিয়া, পাবনা, মেহেরপুরসহ আশেপাশের বেশ কিছু জেলা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। 

প্রতিবেশী দুই রাজ্যে বন্যার জেরে পানির চাপ পড়েছে। ফারাক্কা বাঁধ এলাকায় পানি বিপৎসীমার ৭৭ দশমিক ৩৪ মিটার ওপর দিয়ে বইতে থাকায় বাধ্য হয়ে গেট খুলতে হচ্ছে। সেক্ষেত্রে ফিডার ক্যানেলেও পানির পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে।

ফারাক্কা বাঁধের জেনারেল ম্যানেজার আর দেশ পাণ্ডে জানান, ফারাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ সবসময় এলার্ট রয়েছে। প্রতি মুহূর্তে নজর রাখা হচ্ছে। খুব কম সময়ের মধ্যে যেভাবে পানির চাপ তৈরি হয়েছে, তাতে ১০৯ গেটের সবকটি খুলে না দিল ব্যারাজের ওপর বড় চাপ তৈরি হচ্ছিল। এর ফলে বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারত। আপাতত ফিডার ক্যানেলে ৪০ হাজার কিউসেক ও ডাউন স্ট্রিমে ১১ লাখ কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে।

তবে ফারাক্কার গেট খোলার বিষয়টি মানতে নারাজ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি বিজ্ঞান শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল করিম। তিনি বলেন, বর্ষা মৌসুমে সব সময়ই গেট হালকা খোলা থাকে। গত ২৬ আগস্ট সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা, এই ১২ ঘণ্টায় পানি বৃদ্ধি পেয়েছে মাত্র ২ সেন্টিমিটার। সন্ধ্যা ৬টায় হার্ডিং ব্রিজ পয়েন্টের পানির লেভেল ছিল ১১. ৯৮ মিটার।

যদি গেট খোলাই থাকতো তবে এক ঘণ্টায় পানি অনেকটাই বৃদ্ধি পেত।

তাছাড়া ঢাকা অফিস থেকে আমাদের কাছে যে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে তাতে আগামী এক সপ্তাহতেও হার্ডিং ব্রিজ পয়েন্টের পানি বিপদসীমা অতিক্রম করবে না। 

ভেড়ামারা ইউএনও আকাশ কুমার কুন্ডু বলেন, আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা তথা হাইড্রোলজি ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করছি। তারপরেও আমরা ভেড়ামারার ক্ষতিগ্রস্ত এবং ত্রুটিপূর্ণ নদী রক্ষা বাঁধের জায়গাগুলো মেরামতের কাজ করে যাচ্ছি। 

উজান ও ভাটি মিলে বাহিরচর ইউনিয়নের মোসলেমপুরের দুটি স্থানের ১০০০ কিমি. এবং জুনিয়াদহ ইউনিয়নের ফয়জুল্লাহপুরে ১০০ কিমি. জুড়ে চলমান বর্ষা মৌসুমে সৃষ্ট ভাঙনরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছি। এছাড়া নদী তীরবর্তী বাঁধ রক্ষার জন্য মোট ১৬১ মিটার জরুরি প্রটেকশন কাজের অনুমোদন পাওয়া গেছে। 

এছাড়াও আমরা বন্যা সতর্কীকরণের সঙ্গে জড়িত  ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, গ্রাম পুলিশ, দফাদারসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সতর্ক থাকার জন্য বলেছে। ভেড়ামারা উপজেলা প্রশাসন সব রকমের পরিস্থিতি সক্ষমতার সঙ্গে মোকাবিলার জন্য সদা প্রস্তুত আছে।

টিএইচ